এ মাসের কবি – অগাস্ট ২০১৩ – প্রশান্ত গুহমজুমদার
জন্ম ১৩৫৯ সনের আশ্বিন মাসের
সংক্রান্তির রাত্রে রানীবাগান, বহরমপুরে। বাবা-মায়ের
শেষ সন্তান প্রশান্ত গুহমজুমদার। ছোটবেলা
থেকেই বই পড়ার অভ্যাস এসেছে তাঁর মায়ের হাত ধরে। পেশাসূত্রে পশ্চিমবঙ্গের ৯ টি
জেলায় ঘুরে বেড়ানো প্রশান্ত গুহমজুমদারের শখ হোলো গাছ করা, সিনেমা দেখা,
ফটোগ্রাফি, পাখিদেখা। প্রকাশিত প্রথম
বই “জলে রাখো, শুদ্ধতায়”। এখনও পর্যন্ত
প্রকাশিত হয়েছে ছটি বই। শেষ বইটি “কাহাদের কথা” প্রকাশিত হয়েছে ২০০৮ সালে। “কৌরব” থেকে। সেখানে, প্রকাশকের কথায়, “প্রশান্ত
গুহমজুমদার সেই ব্যতিক্রমী কবি যিনি প্রবীণ ভাষার ধ্রুপদী আচরণ অন্যথা করে তাকে
ব্যবহার করেছেন নতুন কবিতা রচনায়।” তাঁর সদ্যলেখা কিছু কবিতা
এবার এই পাতায়।
এইখানে যতখানি শব্দ
১০. রাঙা ফলগুলি সামান্য
ঘুমে দোলাচলে রেলগাড়ি যেমত উপন্যাসে মনে হয় অরুণোদয় হা হা শব্দে এইবার যথার্থ
স্টেশনে ভাঙে লাল মাটি সকল তরজায় উচ্চকণ্ঠ কিংবা ফেলাফেলি দিন অপাঙতেয় ব্যর্থ চা
দোকানী কানিসর্বস্ব অপেক্ষায় একটি দুটি পাতা যেহেতু অনিবার্য বাসনার কারুকাজ তাকে দেবে
সহনযোগ্য চৈত্রমাসে এই ভালবাসা অমন বাতাসে আলুথালু
----------
১১. খুনসুটির
আলো প্রকাশ্যে আসিয়া হামাগুড়ি দিলে বাক্যের নিরলস স্বপ্নমাফিক ক্ষয়ে দিনকাল তবে
খোলসে যথেষ্ট বাতাসবাহিত নিরাপদে যেহেতু
প্রতারণার দ্বিপ্রহরগুলি নয় একদিন কোন ছবি-ই জানে আর মুক্তির জন্য তৎপর অথবা আবেগে
কুশল বিনিময় করিবে না
----------
১২. এ প্রকারে
দীর্ঘ শিষ নিশ্চিত লোকাচারগুলির আয়ত শব্দে অকুণ্ঠ হাহা হিহি ক্রিয়া শেষে তাবৎ
বোধ্যতায় হাতে হাত সমগ্র পিতার রাত্রির মহিষগুলি আর আহত কুকুরশাবক ছুটে যায় শহরের
নাতিঅন্ধকারে উপশমসন্ধানে আর নক্ষত্রসমূহ একবার সামান্য কৌতূহলী মুখে পুনরায়
অনন্তের ছবি যেন প্ররোচনা এই আমাকে, সামান্য ফটোগ্রাফে
----------
১৩. অবিরাম এই
কলস আর ভাবিতেছি তিমিরে পূর্ণ হইল শতেক বছরের পর অনুশোচনায় ভালবাসায় ভাতের গন্ধে
পানপাতায় গ্রন্থের অন্ধকারে শূন্যে ভাষায় ভাবে চৈত্রের তুমুল ছাতিমে অনুসন্ধানে
একা ভ্রান্তিতে তৎসম আড়ালে ধ্বনিতে কিঞ্চিত মুকুল পথে অঙ্ক শাস্ত্রের যোজন দূরত্বে
সেই অসহ স্নান
----------
১৪. হাঃ ভুতুম
শাকে উৎপন্ন এই কোলাহলে প্রাক্তনী সঙ্গীতে অন্তমিলে মৃদু ভাষ্যে মৃত্যুর কথা
সন্ধ্যার কথা অবচ্ছিন্ন বাতাবিলেবুর কথা হয় আর দ্যাখো পরিবর্ত আমূল খেলিতেছে
বাক্যবন্ধে স্বমেহনে অন্ধকার ইস্কুলে পাঠ্যক্রমের যথেষ্ট বাহিরে যেন ওইখানে
অনতিঅতীতে আর কোন কাহিনী সংবর্তনের অপরাহ্ন ভাবিবে না প্রকাশ করিবে না মাতৃআজ্ঞা
পথে পথে স্পর্ধা করিবে না অস্পৃশ্যের আকাঙ্খা বেত্রাঘাত লৌকিক রাত্রির কেওটিক
অন্তিম পাখির, সম্বর্ধনার গুণ
----------
১৫.পরিচয়ের ভুল
যেন লঘুগুরু মাত্রাহীন অক্ষরবৃত্তের স্বভাবে ব্যাখ্যাপ্রয়াসী আর কবেকার পঙ্খের
পত্রসমূহে আলোহীন এক অমিয় পরিত্যাগের কথা রাত্রির কথা পরী গ্রহনের কথা ইতিমধ্যে
কথিত বিভিন্ন জোকারসহ অন্তের বালির চিহ্নে বর্তমানযথা সাদা তালপাখায় গুনগুন তাহাকে
----------
১৬.চামচে ওষুধে
স্থির ইঙ্গিতে অতঃপর প্রতারণা পর্যন্ত বাতাসের যাতায়াতে দেখা যায় প্রবেশের কটি আর
স্পর্ধা করো ঈশ্বরের মুখ স্পর্শে স্পর্শে ক্লিষ্ট নীল যেন কোন হেতু এ বিসর্জনে আলো
আর জ্বালিবে না তুমি আজ
----------
১৭.তাঁহারা, এই
ফটোগ্রাফে মহাগর্তের দিকে যেন শোকাভিভূত হতঞ্জান স্থিরচিত্ত পেশাদার অবসানের এক
কল্পের প্রয়াস করিতেছেন, এমন কষ্টবোধে মধ্যযামে পুনরায় প্রাচীন স্তম্ভ একা নিবিড়ে
স্থাপন করিল নিজেকে, সেই মূষিক
----------
১৮. শব্দসব
ক্যাওরামি করে সবুজ সামান্য আলোয় দুধ উথলে ওঠার অব্যবহিত পূর্বে একা হতে হতে
উষ্ণতা কিছু পায় যেন বা কেহ অপেক্ষা করিতেছে দুয়ার বাতাসে অশ্রুজলে প্রাচীন পাপের
আলিঙ্গনে অন্ধকারে আবার খেলাচ্ছলে চেয়ারটেবিলে ঈশ্বরের দিব্যি দিনাতিপাতের নামে
যেন বা পুনরায় ভুল হবে ছায়া হবে বলে উঠবে পরিচ্ছন্ন প্রভাতী সুমঙ্গল দাম্যত দত্ত
দয়ধ্বম্
----------
১৯. সম্পূটে
আঁধার প্রয়াস করিয়াছে দ্বিতীয় স্পর্ধা ঐ অলোকসামান্য জলে যেহেতু পলায়নের আর কিছু
নাই কেবল অতুল বালি পতনশীল শব্দের রক্তের ছায়া অবশেষ অনবহিত সঙ্ঘারামে আর সে
প্রার্থনা করে একদিন এই গোষ্ঠের অবসানে ভাষার হবে ইঙ্গিতের হবে যেহেতু এরূপ
পুনরুত্থানের নিয়ম
----------
২০.আলোছায়ার
কথায় দরজা হইতে কোলাহলে প্রতিমায় কুলুকুলু আনন্দ মাখিতে স্পর্ধা করিনা যেহেতু
আবাহনের কাঁটা কিছু গোল তাওলায় এবং তাহারা আসিবে না বৃষ্টি বৃষ্টি বেগুনি ফুলে ভুল
ক্লিপের মগ্নতায় একটা বিকালের দিকে অদ্ভুত পাখির ডানায় সিমেন্টরঙে ভাঙা দরজায় আর
ভয় অপর প্রান্তে তাই তাই তাই মামাবাড়ি থাকে না এই যাঃ গোলের মধ্যে হাট্টিমাটিম টিম
আসিতেছে বাঁশবাগানের মস্তক তক্উঁচু পোলের মাথায় মণিদিদি নগ্ন প্রায় চাঁদের এ
প্রান্তে রাজার বাড়ির ছাদের দিকে, কেন বা নীর আ আল্জিভ সুনীল আমাকে এমন রাত্রে
মাথাটুকু জলের অতীতে রাখিয়া হিজড়েমাফিক ভাবে আর কেন বা নীল অনিল বর্ণে বরণে
উপসংহারে সাদা ফুল, ইচ্ছা বা বাধ্যতায় গড় করি, প্রাণপন, খুলিয়া যাওয়া বৃক্ষের রোম
রোম অঞ্চলে, বুঝি না