73rD pOsT : প্রবীর রায়


এ মাসের কবি সেপ্টেম্বর ২০১৩ প্রবীর রায়


প্রবীর রায়ের জন্ম ১৯৫২ সালে। পেশায় ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়র প্রবীর রায় চাকরী ও বিবাহসূত্রে আস্তে আস্তে জলপাইগুড়ি শহরের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গ্যাছেন বহুদিন। ঠিকানা - শ্যামলছায়া উকিলপাড়া জলপাইগুড়িআশি শেষের দিকে শ্যামলছায়ার আড্ডা জমে ওঠে এরকা পত্রিকাকে ঘিরে তিনি সংহত কবিতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রসঙ্গত, এখন বাংলা কবিতার কাগজ-কে ঘিরে শ্যামলছায়ার আড্ডা আজও সচল তুমুলভাবে। প্রবীর রায়ের কবিতার প্রথম বই ম্যাজিক লণ্ঠন প্রকাশিত হয় ১৯৮০ সালে। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে মোট পনেরোটি বই। শেষ বইটি বাকি অংশটুকু প্রকাশিত হয়েছে ২০১৩ সালে। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে নির্বাচিত কবিতা। ২০১৩-র জানুয়ারীতে এখন বাংলা কবিতার কাগজ থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কবিতা সমগ্র ১। প্রবীর রায়ের সদ্যলেখা কিছু কবিতা এবার এই পাতায়। কবিতাগুলি পড়ে আপনার মুগ্ধতা বা সংশয় জানাতে পারেন কবিকে , উপরের ছবিটির তলায় তাঁর নামের উপর ক্লিক করে সরাসরি ফেসবুকে ।





প্রবীর রায়ের কবিতা
----------------------

 অকুল ভেলা

আলোড়িত হওয়াটা যেমন ভুল বার্তা ছিল
তেমনি পাখির শিসকে শুরুর ইঙ্গিত ভেবে
চোখের জানালা খুলে  ঠোঁটের দরজা খুলে
নাআলোকে ডেকে আনা  শুধু দোষারোপ জন্ম দিল

 উদ্দেশ্য বিধেয়

সহ্যসীমার কথা ও কাহিনী ঘুম পাড়াচ্ছে
দোলন চাপিয়ে দিচ্ছে খোলাখুলি বলার ইচ্ছে
মোমবাতি যতবার জ্বলে ততবার নিভে যায়

মিছিলে যে তোমার পাশে ছিল
তাকে কি সঠিক চিনেছ?

দহনকাল

গন্ধ পুড়ছে   সাদা ছাইয়ের উড়ে যাওয়ায় শ্মশানের ভাষা
রাক্ষসজন্ম থেকে আগুনের কুঁড়ি
রক্তনদীর মধ্যে একটা ঘুরপাক ফোঁপানি
শোকমন্ত্রে ভাঙা ভাঙা অশ্রুশিবির
অনেক দূরে  অথচ কতটা কাছে

ঘনিষ্ঠ কথা

অজানাকে আর একটা অজানার কাছে যেতে হয়
ঢেউকে মাতাল করে আরেকটা ঢেউ
এতদিন এভাবেই প্রাপ্ত এই বয়েস গড়ন
তবুওতো সীমার এখন কোনও পরিসীমা নেই
জন্মবার এতদিন হোঁচট পৌনঃপুনিক হয়ে আলগা
স্বভাবে নিজস্ব থাকছেনা অথচ অভাব থাকছে
অনায়াস ঘটতে পারছেনা
আরেকটা অনায়াস নিয়ে যাচ্ছে তাকে
অথচ অঝোরে ঝরে যাচ্ছে কী যেন কী যেন

না বলার মত কথা

ঝুঁকে পড়া থেকে গজিয়ে উঠছে গুল্ম    খুঁটিনাটি
একপলক সম্মোহন থেকে ছড়িয়ে পড়া বিষ
ঐযে তর্জনী তুলে বলেছিল
এইভাবে হাঁটু গেড়ে বসে দণ্ড নিতে হয়
অকাল বৈশাখ এসে বিশয় পুড়িয়ে দিয়ে এমন চলে গেল যে
কাঠের বাক্সঘরে হাঁসের কঙ্কাল পড়ে আছে

আবার নতুন করে

বন্ধুর কাঁধে হাত রাখতেই মুখ ফেরাল অচেনা
হাহাকারের মত বসন্তের উল্টো দিক
সে হাত ধরতে বলল
শুনলাম অস্পষ্ট মিছিল থেকে ডাক

ঘটনার একটানা

ঘুমের মধ্যে হেঁটে চলা মানুষের দিক ঠিক করে দিচ্ছে  বিষরাত্রি
চাঁদ হারিয়ে ফেলা অন্ধকার থেকে নির্দেশ আসছে

জেগে ওঠো পাখিডাক
জেগে ওঠো গাছময় হর্ষপত্রিকা
ফিরে এসো  অবাক দুপুর 

আজ এই পর্যন্ত

আগামী   একটা সময়ের জন্মকুহক
প্রতিদিন ভুল শুধরে একটা নতুন আসে
পুরনোকে ছিঁড়ে ফেলতে হবে
টুকরো উড়িয়ে ফেলতে হবে
পুড়িয়ে ফুরিয়ে ফেলতে হবে
বাকিটা আগামীকাল   তার ক্লান্তি নিঃশ্বাসে আটক বর্ণালী

রূপকথা

অ্যাকোরিয়ামে  রঙিন মানুষ    গাছের মায়াবী তোলা পাল   বুদবুদে আলোখেলা
ভাবনা বিহ্বলতা পেয়ে যায়    হাওয়ার আলপথে শরীরগুলি তরঙ্গ দ্যায়
আকাশী দোলনা আর সবুজ হাতছানির মধ্যে শিশুরা খেলা করে

জড়িয়ে ধরার মত  

ফিরে আসাটা প্রতিদিন যুদ্ধবাজ পাখি ওড়াময়
মাটিতে পতাকা পুঁতে সবুজ অক্ষরমালায় রোদ
ছড়িয়ে দিতে দিতে হাওয়া খোলামেলা মুঠিতে ধরতেই আহা
বন্ধুদের সাথে গান গাইতে গাইতে    রক্তের দাগ মুছতে মুছতে

ক্ষেতটান

হাওয়াকেই কাটছে কোদাল আর মাটি খুলে যেতে থাকে
তার গুঁড়ো কালোয় সকাল উঠছে আস্তে আস্তে
এর চেয়ে বেশী বলা যায় যদি রোদের নমুনা নিয়ে রেখে দিতে পারি
কতখানি শ্রম   তাতে কতখানি ভ্রম  দেখে নিতে পারি 

প্রবাহ

একটা খই থেকে বেরিয়ে অনেকটা খইএর হাওয়ায় চলো বেড়িয়ে আসি
শীতের সাদায় এক লালটুপী পড়া বুড়োর সাথে অনেক্ষণ খসিয়ে
তারপর শুকনো উড়ুউড়ু ছড়িয়ে পড়ি
ঘাসের তারের সুরে বাজে কি বাজেনা শিশিরের কনা  শুনে আসি


------------------------------------------------------------------------------------------------------
প্রবীর রায় শ্যামলছায়া উকিলপাড়া জলপাইগুড়ি - ৭৩৫১০১ মোবাইল নং - ৯৪৩৪০৬১৭৯৪